সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবি ঐক্য পরিষদের
ইত্তেফাক রিপোর্ট
সংসদে পাশ হওয়ার এক বছর পর কার্যকর হলো নতুন সড়ক পরিবহন আইন। গত ১ নভেম্বর নতুন আইন কার্যকর হলেও গতকাল সোমবার এর প্রয়োগ শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর ছয়টি স্থানে মোট আটটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছেন বিআরটিএ-এর পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) এ কে এম মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, উত্তরা, বনানী, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
এদিকে গতকাল তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে কাভার্ডভ্যান ট্রাক পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ স্থগিত করে সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) আদালত-৮-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের প্রয়োগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। তবে প্রথম দিন হিসেবে জরিমানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রয়োগ না করে সচেতনতার জন্য আইনের মধ্যে থেকেই কম জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, অভিযানকালে দেখা হচ্ছে—ফিটনেস, কালার, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। এর বাইরেও বাসের ভেতরে ভাড়ার তালিকা না রাখা, হাইড্রোলিক হর্ন থাকা, নারীদের জন্য আসন বরাদ্দ না রাখার মতো অপরাধে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব অভিযোগে, সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ১৩টি গাড়ি চালককে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
কাকলী বাসস্ট্যান্ডের পাশে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত-৪ পরিচালনা করছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম এম সামিরুল ইসলাম। বেলা ১টা পর্যন্ত সাতটি মামলা ও ৯ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি।
কাকলীতে ট্রাফিক সার্জেন্ট আফসানা ফেরদৌস পথচারীদের সামলানো নিয়ে কিছুটা বিরক্ত। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কয়েকবার গাড়ি থামিয়ে পথচারীদের পার করে দেওয়া হয়েছে। এক জন-দুই জন করে আসতেই থাকে। সবার জন্য যদি গাড়ি থামাতে হয়, তাহলে তো সড়কে গাড়িই চলবে না। আর ফাঁক পেলেই সড়কের মধ্য দিয়ে দৌড় দেবে। পথচারী মেনটেইন অনেক টাফ।’ তবে আজ (গতকাল) পথচারীদের কোনো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান কাকলীতে আদালত পরিচালনা করা ম্যাজিস্ট্রেট।
বঙ্গবন্ধু পরিবহনের মালিক পরিচয় দেন মনিরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি। তার অভিযোগ, মামলার পর মামলা হয়; কিন্তু দ্রুত তার ফয়সালা হয় না। চালকদের লাইসেন্স প্রক্রিয়াতে বিআরটিএর ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, ‘একটা লাইসেন্স করতে ৭-৮ হাজার টাকা লাগে। ড্রাইভার গরিব, এত টাকা কই পাইব। আর একবার নবায়ন করতে দিলে দিনের পর দিন পার হয়। কাগজ বাইর হয় না, আর রাস্তায় নামলেই মামলা খায়।’ তবে তিনি জানান, আইনের প্রতি তারাও শ্রদ্ধাশীল। চালকদের নিয়মিত সচেতন করেন।